class 11 history semester 2
Q) টমাস ক্রমওয়েলের অবদান সংক্ষেপে আলোচনা কর ।
টমাস ক্রমওয়েলের অবদান:
ইংল্যান্ডের সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম রূপকার টমাস ক্রমওয়েল (Thomas Cromwell) ছিলেন রাজা অষ্টম হেনরির প্রধান পরামর্শদাতা ও সচিব। ১৫২০ খ্রিস্টাব্দে তিনি ইংল্যান্ডরাজ অষ্টম হেনরির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কার্ডিনাল উলসির (Cardinal Thomas Wolsey) সেক্রেটারি হিসেবে নিযুক্ত হন এবং এসময় থেকেই ইংল্যান্ডের রাজনীতির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র স্থাপিত হয়। এই সময় অষ্টম হেনরির বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত সমস্যার নিষ্পত্তিতে ব্যর্থ উলসিকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদচ্যুত করা হয় এবং তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন টমাস ক্রমওয়েল। পরবর্তীকালে ক্রমওয়েল রাজা অষ্টম হেনরির ভাইকার জেনারেল ও চ্যান্সেলার পদেও নিযুক্ত হন। নব্য রাজতন্ত্রের আদর্শকে সুদৃঢ় ভিত্তি প্রদান করতে ক্রমওয়েল যেসকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তা হল-
(১) চার্চে রাজার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা:
অষ্টম হেনরি ও ক্যাথরিনের বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে পোপের সঙ্গে বিরোধ হলে, ক্রমওয়েলের পরামর্শে হেনরি নিজেকে চার্চের প্রধান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। ১৫৩১ সালে ধর্মযাজকদের সমর্থনে তাকে এই ক্ষমতা প্রদান করা হয়। পরবর্তী আইন পাসের মাধ্যমে চার্চে পোপের পরিবর্তে রাজার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
(২) ধর্মসংস্কার ও রিফরমেশন পার্লামেন্ট:
জাতীয় রাষ্ট্র গঠনে ক্রমওয়েল পোপের ক্ষমতা খর্ব করে ইংল্যান্ডকে রোমান চার্চ থেকে বিচ্ছিন্ন করেন। ১৫২৯-১৫৩৬ সালে রিফরমেশন পার্লামেন্টে প্রোবেট অ্যান্ড মরচুয়ারি অ্যাক্ট, অ্যাক্ট অফ প্লুরালিটিজ, রেসট্রেন্ট অফ অ্যাপিলসসহ নানা আইন পাস করা হয়, যা ধর্মসংস্কারকে সম্পূর্ণ করে।
(৩) জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি: ১৫৩৪ সালের অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি আইন অনুযায়ী রাজাকে চার্চের প্রধান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, ফলে রাষ্ট্র ও চার্চে রাজার কর্তৃত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত হয়।
(৪) মঠের প্রাধান্য খর্ব:
ইংল্যান্ডে চার্চের মতো মঠগুলিরও দৌরাত্ম্য কম ছিল না। অনেকক্ষেত্রে তারা রাজার শাসন অগ্রাহ্য করত, যা একটি জাতীয় রাষ্ট্রের পক্ষে ছিল ক্ষতিকারক। এই চরম সত্য উপলব্ধি করে টমাস ক্রমওয়েল মঠগুলি ধ্বংসসাধনে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেন। ক্রমওয়েল মঠগুলির ধ্বংসসাধনের উদ্দেশ্যে দুটি আইন পাস করেন যথা- (a) প্রথম উচ্ছেদ আইন (১৫৩৬ খ্রিস্টাব্দ) ও (b) দ্বিতীয় উচ্ছেদ আইন (১৫৩৯ খ্রিস্টাব্দ)। এই ঘটনার দরুন মঠগুলি রাজার নিয়ন্ত্রণে আসে ও ইংল্যান্ডে রাজার ক্ষমতা, মর্যাদা ও আর্থিক প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পায়।
(৫) প্রশাসনিক কাঠামোর পরিবর্তন:
ক্রমওয়েল প্রশাসনের মধ্যযুগীয় কাঠামোর অবসান ঘটিয়ে জাতীয় আমলাতান্ত্রিক কাঠামোর প্রবর্তন করেন। এই ব্যবস্থায় রাজা দুর্বল হলেও রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় না কারণ এই শাসনকাঠামোর শীর্ষে থাকেন মন্ত্রীসভা। এ ছাড়া ১৯ জন সদস্যকে নিয়ে ক্রমওয়েল প্রিভি কাউন্সিল (Privy Council) গঠন করেন এবং নিজে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পদে আসীন হন।
(৬) অর্থবিভাগের সংস্কার:
আর্থিক প্রশাসনিক বিভাগ প্রবর্তন করে ক্রমওয়েল আয় বৃদ্ধি করেন। আর্থিক বিষয় দেখাশোনার জন্য তিনি ছ'টি পৃথক বিভাগ প্রবর্তন করেন। এইভাবে মধ্যযুগীয় ব্যবস্থা থেকে নতুন রাষ্ট্রকাঠামো প্রবর্তন করে ইংল্যান্ডে নব্য রাজতন্ত্রের সত্তাকে টমাস ক্রমওয়েল জাগরিত করেন।
∆ পরিশেষে বলা যায় যে, আধুনিক ইংল্যান্ডের শাসনকাঠামোর বিকাশে টমাস ক্রমওয়েল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাঁর গৃহীত পদক্ষেপগুলির দরুনই ইংল্যান্ডে নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
## ক্লাস ইলেভেনের দ্বিতীয় সেমিস্টারের 100% কমন পেতে আমাদের এই সাইট এ ভিজিট করুন।
*** class 11 history semester 2
Q) আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তাবিদ হিসেবে অ্যারিস্টটলের ভূমিকা আলোচনা কর। 6
0 Comments
If you like the posts, you must comment. and if there is any problem , please let me know in the comments.