ইন্দোচিন কীভাবে ঠাণ্ডা লড়াইয়ের কেন্দ্রে পরিণত হয়? |How did Indochina become the center of the Cold War?

 ইন্দোচিন কীভাবে ঠাণ্ডা লড়াইয়ের কেন্দ্রে পরিণত হয়? |How did Indochina become the center of the Cold War?

ইন্দোচিন কীভাবে ঠাণ্ডা লড়াইয়ের কেন্দ্রে পরিণত হয়? |How did Indochina become the center of the Cold War?


 সূচনা: 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়কালে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী উল্লেখে ঠান্ধা লড়াইয়ের কেন্দ্রস্থল ছিল ইন্দোচিন। ইন্দোচিন তিনটি পৃথক অঞ্চল টান্ডিং, আগ্রাম ও কোচিন চিন নিয়ে গঠিত ছিল। প্রথমে ফ্যাসি উপনিবেশাধীন শাসন ও পরে আপানি সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের কবল থেকে মুক্ত হতে চাইলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই ইন্দোচিন অঞ্চলটি ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা লড়াইয়ের কেন্দ্রে পরিণত হয়।

● প্রথম পর্যায়ে:

[1] ফরাসি উপনিবেশবাদের বিরোধিতার সূত্রে। ১৮৭ খ্রিস্টাব্দে) ফরাসি সম্রাট ভূমির নেপোলিয়ন আমাদের সম্রাটের সঙ্গে এক চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ইন্দোচিনের ওপর ঔপনিবেশিক আধিপত্য কায়েম করেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন মিত্রশক্তি জোটের সদস্যরাষ্ট্রগুলির ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যের ভিত আলগা হতে শুরু করে। ইন্দোচিনে ফরাসি কর্তৃত্বের বিরোধিতা শুরু হয়। ফরাসি উপনিবেশবাদের এই বিরোধিতা ইন্দোচিনে ঠান্ডা লড়াইয়ের কেন্দ্র হিসেবে প্রাথমিক পটভূমি গড়ে দেয়।


[2] আপানি সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতার সুবাদে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিবাহিনীর হাতে বিষাক্ত হয়ে ফ্রান্স ইন্দোচিন ত্যাগ করলে, জাপান সেখানে কর্তৃত্ব স্থাপন করে। জাপান ইন্দোচিনে পুবর্তন আন্নামের সম্রাট বাও দাইয়ের নেতৃত্বে এক তাঁবেদারি সরকার প্রতিষ্ঠা করে। হো-চি-মিনের নেতৃত্বে পরিচালিত ইপোচিলের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে সোভিয়েত সাম্যবাদী শক্তি সমর্থন জানালে ইন্দোচিন ঠান্ডা লড়াইয়ের কেন্দ্র রূপান্তরিত হয়।

[3] মার্কিন হস্তক্ষেপের সূত্রে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্তিমলগ্নে অক্ষশক্তি জোটের পরাজয় সুনিশ্চিত হলে, সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় জাপানি সাম্রাজ্যবাদের পতন ঘনিয়ে আসে। হো চি মিনের নেতৃত্বে ভিয়েতনামি মুক্তি ফৌজ আরও তীব্রভাবে মুক্তি আন্দোলন গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়। এরকম পরিস্থিতিতে ফ্রান্স পুনরায় ব্রিটিশ ও মার্কিন মদতে ভিয়েতনামে ফরাসি ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠায় উদ্যত হলে ইন্দোচিন ঠান্ডা লড়াইয়ের কেন্দ্র পরিণত হয়।


                     দ্বিতীয় পর্যায়ে জেনেভা সম্মেলনে শান্তি চুক্তির মাধ্যমে সমগ্র ইন্দোচিনে সাময়িক শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু জেনেভা সম্মেলনের সিদ্ধান্ত রূপায়ণের পথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ালে ভিয়েতনাম সংকটের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়। ইন্দোচিনসহ সময় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাম্যবাদের প্রসার রোধের জন্য বেষ্টনী নীতিকে বলবৎ করতে উদ্যোগে নেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ ভিয়েতনামে ন-দিন-দিয়েমকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করে ক্ষমতায় বসালে তার বিরুদ্ধে চিন ও সোভিয়েত মদতে ভিয়েতমিনরা যুদ্ধ শুরু করে। এই যুদ্ধ ক্রমশ ঠাণ্ডা লড়াইয়ের পরিবেশ তৈরি করে।


উপসংহার :

দিয়েন বিয়েন ফু ঘটনা ও জেনেভা সম্মেলনের মাধ্যমে ফ্রান্স ভিয়েতনাম থেকে সরে  গেলে আমেরিকা ও রাশিয়া ভিয়েতনামের সংকটে সরাসরি অংশগ্রহণ করে। এর ফলে ইন্দোচিন ঠান্ডা লড়াইয়ের কেন্দ্রে পরিণত হয়।

Post a Comment

0 Comments